দু’দিনের সফরে আজ উত্তরবঙ্গ যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । সোমবার দুপুরে কলকাতা থেকে বিমানে বাগডোগরার উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা রয়েছে তাঁর । তারপর সেখান থেকে চলে যাবেন উত্তরকন্যায় ৷
দুর্গোৎসবের পর থেকে এটি মুখ্যমন্ত্রীর তৃতীয়বারের উত্তরবঙ্গ সফর । পুজোর পরপরই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারের বিস্তীর্ণ এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল । সেই সময় থেকে মুখ্যমন্ত্রী নিজে উদ্ধারকাজ ও ত্রাণ কার্যক্রমের তদারকি করে আসছেন । বন্যা পরিস্থিতি পর্যালোচনার পাশাপাশি এবার তাঁর সফরের মূল লক্ষ্য — পুনর্গঠনের কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা করা ও দুর্গতদের হাতে সরকারি সহায়তা পৌঁছে দেওয়া । সেই কারণেই তাঁর এই সফর বলে জানা গিয়েছে ৷
সরকারি সূত্রে খবর, মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গের সচিবালয় উত্তরকন্যায় মুখ্যমন্ত্রী একটি প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দেবেন । ওই বৈঠকে উত্তরবঙ্গের পাঁচজেলার জেলাশাসক-সহ একাধিক বিভাগের পদস্থ আধিকারিক ও প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা উপস্থিত থাকবেন । বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্প, বিশেষত ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পের অগ্রগতি এবং পুনর্গঠনের কাজ নিয়ে আলোচনা করবেন । উত্তরকন্যার বৈঠক থেকেই তিনি একাধিক সরকারি পরিষেবা প্রদান করবেন বলেও জানা গিয়েছে ।
প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির পুনর্বাসনে রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ নিয়েছে । বিপর্যয়ে রাজ্যজুড়ে 12 হাজারেরও বেশি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার মধ্যে অধিকাংশই উত্তরবঙ্গের বাসিন্দা । প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে 1 লক্ষ 20 হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে । রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের বরাদ্দ অর্থ পঞ্চায়েত দফতরের মাধ্যমে বিতরণ করা হবে, কারণ ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পের বাস্তবায়নের দায়িত্বও সেই দফতরের উপরেই রয়েছে ।
ইতিমধ্যেই সেচ, পূর্ত, জনস্বাস্থ্য কারিগরি ও বিদ্যুৎ দফতর উত্তরবঙ্গে ক্ষয়ক্ষতির মেরামত ও পুনর্গঠনের কাজ সম্পন্ন করেছে । মুখ্যমন্ত্রী সেই কাজ সরেজমিনে খতিয়ে দেখবেন । পাশাপাশি, যেসব দুর্গত মানুষ গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র হারিয়েছেন, তাঁদের হাতে নতুন নথি দ্রুত পৌঁছে দেওয়ার কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে ।
সফর শেষ করে মঙ্গলবার বিকেলে কলকাতায় ফেরার কথা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর । প্রশাসনের একাংশের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সফর শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিকতা নয়, মানুষের পাশে থেকে তাঁদের জীবনে স্থায়ী পরিবর্তন আনার চেষ্টা— এটাই মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্য । যা বিপর্যস্ত মানুষের মনোবল বাড়াতে সাহায্য করবে ৷





Leave a Comment