নয়া দিল্লি: বাংলাদেশের আন্দোলন কোনও স্বতঃফূর্ত আন্দোলন ছিল না, সুপরিকল্পিতভাবে উৎখাত করা হয় শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) সরকারকে। এই দাবি বহুবার করেছেন শেখ হাসিনা নিজে। এবার বাংলাদেশের এক প্রাক্তন মন্ত্রীও সেই কথাই বললেন। তিনি এও জানিয়ে দিলেন যে এই ষড়যন্ত্রের পিছনে কাদের হাত ছিল। মহিবুল হাসান চৌধুরীর এই সাক্ষাৎকারই এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।
রুশ সংবাদমাধ্যম রাশিয়া টুডে-কে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রাক্তন মন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। বাংলাদেশের ছাত্র গণ আন্দোলন নিয়ে কার্যত বোমা ফাটান তিনি সাক্ষাৎকারে। বলেন যে ২০২৪ সালে বাংলাদেশে ওই বিক্ষোভ-আন্দোলনের পিছনে আমেরিকার হাত ছিল। মার্কিন সরকারের একটি অলাভজনক সংস্থা এবং ক্লিনটন পরিবার এর নেপথ্যে ছিল। তারা সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার, গায়ক, মৌলবাদীদের থেকে শুরু করে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের বিপুল টাকা দিয়েছিল এই আন্দোলনে ইন্ধন দিতে এবং হাসিনা সরকারকে উৎখাত করতে।
মহিবুলের আরও দাবি, মার্কিন সরকারের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনূস। তাঁকে ‘ডেঞ্জারাস’ বলেই উল্লেখ করেন প্রাক্তন মন্ত্রী। বলেন, “কিছু এনজিও, বিশেষ করে আমেরিকার, USAID-র মতো। এরা ২০১৮ সাল থেকে আমাদের সরকারের (আওয়ামী লিগ) বিরুদ্ধে প্রচার চালাচ্ছিল।”
উল্লেখ্য, ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট বা USAID হল মার্কিন প্রশাসনের সবথেকে বড় মানবিক সহায়তা প্রতিষ্ঠান। খরচ কমানো ও দক্ষতা বাড়ানোর জন্য যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইলন মাস্ককে ডজ (DOGE) তৈরি করে দিয়েছিলেন, সেই সময় মাস্কের প্রথম নিশানাই ছিল এই ইউএসএইড।
বাংলাদেশের আন্দোলন এবং হাসিনা সরকারের পতনে তাদের কোনও ভূমিকা নেই বলেই করে এসেছে আমেরিকা। তবে এর আগে শেখ হাসিনাও একই অভিযোগ করেছিলেন। আমেরিকা সেন্ট মার্টিন আইল্যান্ড চেয়েছিল, শেখ হাসিনা সেই প্রস্তাবে রাজি না হওয়াতেই ষড়যন্ত্র করে সরকার ফেলে দেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন হাসিনা। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনূস বাংলাদেশকে আমেরিকার কাছে বিক্রি করে দিচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি।
মহিবুল হাসান চৌধুরী সাক্ষাৎকারে জানান যে গত বছরের জুলাই মাসে যে আন্দোলন হয়েছিল, তা গোটাটাই অত্যন্ত সুচারুভাবে পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তিনি দাবি করেন, “ক্লিন্টন পরিবার ও ইউনূস সরকারের মধ্যে গোপন আঁতাত দীর্ঘদিনের। বহু বছর ধরেই তারা সরকার বদল করার চেষ্টা করছিল। আগে বিষয়টা প্রকাশ্যে ছিল না, কিন্তু এনজিও গুলোর ফান্ডিং চলছিল। ওরা বাংলাদেশের সরকার বদলে মরিয়া ছিল।”
আমেরিকা থেকে আসা বিপুল অর্থ কোথায় গেল, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন মন্ত্রী। তিনি অভিযোগ করেন, বাংলাদেশে সরকার বদলের জন্যই ওই টাকা খরচ করা হয়েছিল। টাকা দিয়ে পরিকল্পনা মাফিক এই অশান্তির ছক কষা হয়েছিল, যা জুলাই-অগস্ট মাসে দাঙ্গার রূপ নেয়।






Leave a Comment